জাতীয় খেলা হকির উপর রচনা বাংলায় | Essay On National Game Hockey In Bengali - 2500 শব্দসমূহে
আজ আমরা বাংলায় জাতীয় খেলা হকি নিয়ে রচনা লিখব । জাতীয় খেলা হকির উপর লেখা এই রচনাটি 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10, 11, 12 এবং কলেজের ছাত্রদের জন্য লেখা। আপনি আপনার স্কুল বা কলেজ প্রকল্পের জন্য বাংলায় জাতীয় খেলা হকির এই রচনাটি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে অন্যান্য বিষয়ে বাংলায় প্রবন্ধ পাবেন, যা আপনি পড়তে পারেন।
বাংলায় জাতীয় খেলা হকি রচনা
মুখবন্ধ
অনেক দেশের মত, হকি ভারতের অধিকাংশ মানুষ খেলে। হকি খেলা স্কুল, কলেজ এবং অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলা হয়। হকি একটি আন্তর্জাতিক খেলা। হকি খেলা শুরু করেছিল ব্রিটিশরা। ক্রিকেটের মতো হকি খেলাটি ভারত ও অন্যান্য দেশে খেলা হয়। হকি সারা বিশ্বে খেলা হয়। এটি একটি বিনোদনমূলক খেলা, খোলা মাঠে খেলা হয়। ভারতে খেলাধুলার সাথে হকির একটি উজ্জ্বল এবং গভীর ইতিহাস রয়েছে। ভারতে অনেক মহান খেলোয়াড় আছেন যারা দেশের হয়ে হকি খেলেছেন। হকি দেশের প্রাচীনতম খেলা। বাঁকা লাঠি দিয়ে হকি খেলা হয়। লাঠির উদ্দেশ্য হল বল এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং গোল করা। স্ট্রাইকারকে লক্ষ্যে আঘাত করতে দক্ষ হতে হবে যাতে তাদের শট সফলভাবে গোলপোস্টে প্রবেশ করতে পারে। সেই গোলগুলো আটকানোর দায়িত্ব থাকে গোলরক্ষকের, যাতে তিনি বিপরীত দলকে গোল করতে না দিতে পারেন। বড় এবং ছোট বাচ্চারা সমানভাবে হকি খেলা খেলতে পছন্দ করে। হকি আমাদের একত্রে খেলার এবং একে অপরকে সমর্থন করার গুরুত্ব শেখায়। হকি খেলার জন্য কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজন। হকি খেলাটি এতটাই বিখ্যাত হয়ে ওঠে যে, হকি খেলাটি সারা বিশ্বে খেলা হয়।
খেলোয়াড় ও হকি খেলার সময়
এই খেলায় দুটি দল রয়েছে। একটি দলে এগারো জন খেলোয়াড় থাকে। এই গেমটি প্রায় 60 মিনিটের জন্য খেলা হয়। হকি খেলা চার কোয়ার্টারে খেলা হয়। এই খেলা খেলতে একটি বল এবং একটি লাঠি ব্যবহার করা হয়।
লক্ষ্যের বৈশিষ্ট্য
যে দল বেশি গোল করবে তাকেই বিজয়ী বলা হয়। 1908 সালে অলিম্পিক গেমসে হকি স্বীকৃত হয়। প্রথম হকি খেলা হয় গ্রিস ও আয়ারল্যান্ডে।
হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদ
মেজর ধ্যানচাঁদ হকি খেলাকে জনপ্রিয় করেছিলেন। তাকে হকির জাদুকর বলা হয়। তিনি হকি খেলায় ভারতকে ছয়টি সোনা জিতেছেন। তিনি হকি খেলাটিকে তার দেশ ভারতে জনপ্রিয় করে তোলেন। আজও হকির নাম এলে তার নামও নেওয়া হয়। হকির সেই সোনালি যুগের কথা দেশের মানুষ আজও মনে রেখেছে।
বিভিন্ন ধরনের হকি
হকি একটি ভিন্ন ধরনের খেলা। যেমন ফিল্ড হকি, স্লেজ, রোলার এবং আইস হকি। বেশিরভাগ জায়গায় মাঠের হকি খেলা হয়। অনেক ধরনের হকি মানুষ খেলে। যেমন এয়ার হকি, বক্স হকি, ডেক হকি, ফ্লোর হকি, ফুট হকি, টেবিল হকি, জিম হকি, মিনি হকি, আন্ডার ওয়াটার হকি, রক হকি, পাউন্ড হকি ইত্যাদি।
খেলায় পিছিয়ে থাকা
গেমটি একটি শক্তিশালী বল এবং একটি বাঁকা লাঠি নিয়ে গঠিত। এই লাঠির সাহায্যে বল মেরে গোল করা হয়। এই খেলায় পাঁচ মিনিটের ব্যবধান থাকে, যাতে খেলোয়াড়রা একটু বিশ্রাম নিয়ে আবারও উৎসাহের সাথে খেলার সুযোগ পায়।
পুরানো ফ্যাশন হকি
আগে হকি খেলা শুরু হলে লাঠিসোটা থাকত। যা কাঠের তৈরি ছিল। বলটা খুবই মাঝারি ছিল। আগে হকি স্টিক বাঁকা হতো না। এখন হকি স্টিক বেঁকে গেছে।
নিয়ম পরিবর্তন এবং উন্নয়ন
হকি খেলার নিয়মে পরিবর্তন ও বিকাশ ঘটে ইংল্যান্ডে। এর আগে, খেলোয়াড়রা যখন চৌদ্দ মিটার দূর থেকে গোল করত, তখন তা স্বীকৃত হতো না। এখন নিয়মে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে।
হকি খেলার প্রয়োজনীয় নিয়ম
একটি পরিবর্তন করা হয়েছে, যা অনুযায়ী হকি খেলা এখন 60 মিনিট। যা প্রতি 20 মিনিটে তিন-চতুর্থাংশে বিভক্ত। ম্যাচের উদ্দেশ্য হল প্রতিপক্ষ দলের গোল পোস্টে যতটা সম্ভব গোল করা। যে দল সফলভাবে বেশি গোল করে সেই ম্যাচে জয়লাভ করে। এছাড়াও, লাঠির মাত্রা এবং বলের ওজনের নিয়ম ইতিমধ্যে বইগুলিতে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি মাঠে তিনি মাত্রা এবং ওজন ভুল বলে মনে করেন, তাহলে সেই খেলোয়াড়কে ম্যাচ থেকে বের করে দেওয়া হয়। খেলার বেশিরভাগ নিয়মই ফুটবলের মতো এবং নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য কিছু শাস্তি রয়েছে।
হকি সমিতি প্রতিষ্ঠা
1886 সালে হকি অ্যাসোসিয়েশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর হকি খেলার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে। হকি খেলাকে প্রতিটি দেশে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় এবং এটি প্রতিটি দেশে খেলা শুরু হয়।
ভারতে হকি খেলা
ক্রিকেট খেলার যেমন ভক্ত আছে, তেমনি হকি খেলারও ভক্ত আছে। হকি খেলোয়াড়রাও ক্রিকেট খেলোয়াড়দের মতো একই প্রশংসা ও সম্মান পান। তখন দেশে হকি খেলা বিখ্যাত হয়ে উঠছিল। তাই কলকাতা শহরে গড়ে ওঠে হকি ক্লাব। 1928 সালে, ভারতীয় হকি দল তিনটি স্বর্ণপদক জিতেছিল। প্রথমবার, ভারতীয় হকি দল 1928 সালে আমস্টারডামে খেলেছিল।
হকি খেলায় ভারতের সেরা পারফরম্যান্স
সেই সময় ভারত হকি খেলায় বিশ্বের সেরা পারফরম্যান্স করেছিল। এই কারণেই ভারত আন্তর্জাতিক হকি খেলায় জায়গা করে নেয় এবং সারা বিশ্বে ভারতের হকি খেলোয়াড়দের সম্মান বেড়ে যায়। মেজর ধ্যানচাঁদের নেতৃত্বে দেশ ছয়বার স্বর্ণপদক জিতেছিল। এটি 1928 থেকে 1956 সালের মধ্যে ঘটেছিল। সেই সময়ে ভারত হকিতে এতগুলি স্বর্ণপদক জিতেছিল এবং এই কারণেই এই যুগকে স্বর্ণযুগ বলা হয়।
হকি খেলার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম
নিরাপদে হকি খেলার জন্য বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম রয়েছে, যা একজন খেলোয়াড়কে গুরুতর আঘাত থেকে রক্ষা করে। তার সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে একটি হেলমেট, প্যাড, নেক গার্ড, জকস্ট্র্যাপ, কনুই প্যাড, হকি স্টিক এবং একটি বল।
হকির জনপ্রিয়তা
ভারত বহু বছর ধরে হকি খেলায় বিশ্বজয়ী ছিল। হকি খেলা অন্যান্য দেশে যেমন হল্যান্ড, জার্মানি, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদিতে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। হকি খেলায় গোলরক্ষক, রাইট ব্যাক, সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড এবং লেফট ব্যাকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পজিশন রয়েছে যা খেলোয়াড়দের সামলাতে হয়।
স্বর্ণযুগের সেরা কিছু খেলোয়াড়
অজিত পাল, ধনরাজ পিল্লাই, অশোক কুমার, উধম সিং, গগন অজিত সিং, বলবীর সিং প্রমুখ ছিলেন চমৎকার হকি খেলোয়াড়, যারা হকিতে অবদান রেখেছিলেন। মন্ট্রিল অলিম্পিকে সপ্তম স্থান পেয়েছে ভারতীয় হকি।
ভারতের জাতীয় খেলা হকি
আন্তর্জাতিক হকি গেমসে ভারতের খেলোয়াড়রা তাদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়েছেন। এই কারণেই ভারত হকিকে জাতীয় খেলা হিসেবে বেছে নেয়। 1928 থেকে 1956 পর্যন্ত, ভারত হকিতে অবিচ্ছিন্ন জয়লাভ করেছিল। সেই স্বর্ণযুগ আজও গর্বের সাথে স্মরণ করা হয়। টোকিও অলিম্পিক ও মস্কো অলিম্পিকে ভারত স্বর্ণপদক জিতেছিল।
হকির ভবিষ্যৎ
স্বর্ণযুগে হকি খেলায় দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর অনেক ভালো সময় দেখেছিল ভারত। আজ যোগ্য খেলোয়াড়ের অভাব ও উপযুক্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবে ভালো খেলোয়াড় পাওয়া যাচ্ছে না। হকির প্রতি ভালোবাসার কারণেই হকির স্বর্ণযুগ আবার ফিরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ইন্ডিয়ান হকি লিগ হকি খেলাকে উৎসাহিত করতে ভালো পরিকল্পনা করছে।
হকি খেলার গুরুত্ব
হকি খেলা অন্যতম প্রাচীন এবং সুপরিচিত খেলা। ভারতে হকির ইতিহাস বড় এবং বিস্তৃত। আগে বিভিন্নভাবে খেলা হতো। মাঠের হকি মানুষ বেশির ভাগ জায়গায় খেলে। আইস হকি তুষারযুক্ত জায়গায়ও খেলা হয়। হকি আগে ইংরেজি স্কুলে খেলা হত। এটি বেশিরভাগ ব্রিটিশদের দ্বারা বাজানো হয়েছিল। এরপর লন্ডন হকি অ্যাসোসিয়েশন গঠন করা হয়, যাতে হকির নিয়ম মানসম্মত করা যায়।
হকির প্রচার
স্কুলগুলোতে হকি খেলাকে উৎসাহিত করতে হবে। ভালো হকি কোচ নিয়োগ করা উচিত, যারা শিশুদের হকির নিয়ম ভালোভাবে শেখাতে পারেন। যেসব শিশু হকি ভালো খেলে, তাদের স্কুল পর্যায়ে হকি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করা উচিত। যারা ভালো হকি খেলে তাদের সরকারকে সহায়তা করা উচিত এবং শিক্ষার্থীদের সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া উচিত।
উপসংহার
হকি যুবারা খেলতে ভালোবাসে। হকি ও ক্রিকেটের মতো জনপ্রিয় খেলাগুলো তরুণদের কাছে খুবই পছন্দের। হকিকে ভারতের জাতীয় খেলা বলা হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা নিশ্চিত করা হয়নি। আজ হকি খেলোয়াড়দের আবার সেই সোনালী যুগকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। এতে করে হকিকে ফিরিয়ে আনা হবে যেখান থেকে দেশের মাথা উঁচু করে রাখা হয়েছিল। এটা করলে হকিকে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় খেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে। সরকারের উচিত হকি খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করা যাতে তারা আরও উৎসাহ নিয়ে খেলতে পারে।
আরও পড়ুন:-
- বাংলা ভাষায় হকির উপর 10 লাইন বাংলা ভাষায় ক্রিকেটের উপর প্রবন্ধ
তাই এটি ছিল জাতীয় খেলা হকির রচনা, আমি আশা করি আপনি বাংলায় জাতীয় খেলা হকির রচনাটি পছন্দ করেছেন। আপনি যদি এই নিবন্ধটি পছন্দ করেন, তাহলে এই নিবন্ধটি সবার সাথে শেয়ার করুন।