ভারতীয় জাতীয় পতাকা নিয়ে রচনা বাংলায় | Essay On Indian National Flag In Bengali - 2200 শব্দসমূহে
আজ আমরা বাংলায় ভারতীয় জাতীয় পতাকা নিয়ে রচনা লিখব । ভারতীয় জাতীয় পতাকার উপর লেখা এই রচনাটি 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10, 11, 12 এবং কলেজের ছাত্রদের জন্য লেখা। আপনি আপনার স্কুল বা কলেজ প্রকল্পের জন্য বাংলায় ভারতীয় জাতীয় পতাকার এই রচনাটি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে অন্যান্য অনেক বিষয়ে বাংলায় প্রবন্ধ পাবেন, যা আপনি পড়তে পারেন।
Essay on Indian National Flag (National Flag Of India Essay in Bengali) Introduction
প্রত্যেক দেশপ্রেমিক ও দেশবাসীর কাছে জাতীয় পতাকার নিজস্ব স্বতন্ত্র ও বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। জাতীয় পতাকাকে দেশের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমাদের জাতীয় পতাকাকে বলা হয় তিরঙ্গা। জাতীয় পতাকার ওপরে জাফরান, মাঝখানে সাদা এবং নীচে সবুজ। তিরঙ্গার সাদা ডোরায় একটি নীল অশোক চক্র রয়েছে। আমাদের দেশ ব্রিটিশদের অনেক অত্যাচার সহ্য করেছে এবং আমাদের দেশ বহু বছর ধরে দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ ছিল। সর্বোপরি, 1947 সালে আমরা এবং আমাদের দেশ স্বাধীন হয়েছিল। 1947 সালের 15 আগস্ট আমাদের দেশ স্বাধীন হয় এবং তেরঙ্গা উত্তোলন করা হয়। একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিকই বুঝতে পারেন তেরঙার গুরুত্ব এবং এর সঙ্গে যুক্ত দেশপ্রেমের অনুভূতি। যখনই দেশে স্বাধীনতা বা প্রজাতন্ত্র দিবসের মতো কোনো জাতীয় অনুষ্ঠান থাকে, তাই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তা ছাড়াও দেশের নাগরিকদেরও কিছু অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশ বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য দেখায়। আমাদের দেশে সব ধর্মের মানুষ সমান।
সম্মানের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন
স্বাধীনতা দিবসের মতো অনেক জাতীয় অনুষ্ঠানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি অফিসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় অত্যন্ত আনন্দ ও উৎসাহের সঙ্গে। এর পর পতাকা উত্তোলনের পর অনুষ্ঠানে সবাই জাতীয় সঙ্গীত গায়। পতাকা উত্তোলনের পর বিভিন্ন কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয়। প্রতিটি দেশের নিজস্ব জাতীয় পতাকা রয়েছে। ভারতের জাতীয় পতাকা একতা ও স্বাধীনতার বার্তা দেয়।
তিনটি সুন্দর রং দিয়ে তৈরি জাতীয় পতাকা
দেশের জাতীয় পতাকা জাফরান, সাদা ও সবুজ এই তিনটি রঙে তৈরি। তিনটি রঙের কারণে একে ত্রিবর্ণ বলা হয়। জাতীয় পতাকা তৈরি হয় খাদি কাপড় থেকে। পতাকার জন্য অন্য কোন কাপড় ব্যবহার করা হয় না। অন্য কোনো ধরনের কাপড় ব্যবহার নিষিদ্ধ।
জাতীয় পতাকার গুরুত্ব
দেশের সকল মানুষ জাতীয় পতাকাকে ঐক্য ও স্বাধীনতার প্রতীক বলে মনে করেছে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বাস করে। সকল দেশবাসীর উচিত তাদের জাতীয় পতাকাকে সম্মান করা এবং দেশের নাম উজ্জ্বল করা।
তিনটি রঙের গুরুত্ব
জাতীয় পতাকায় উপস্থিত তিনটি রঙের নিজস্ব বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। জাফরান রং ত্যাগ ও নিঃস্বার্থ চেতনার প্রতীক। সাদা রঙ শান্তি, সত্য এবং পবিত্রতার মতো অনুভূতির প্রতীক। সবুজ রঙ মনের শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। পতাকার মাঝখানে সাদা, তাতে নীল অশোক চক্র তৈরি। যার মধ্যে চব্বিশ জন মুখপাত্র উপস্থিত রয়েছেন। অশোক চক্র সত্যবাদিতা, সততা এবং সাফল্যকে নির্দেশ করে। অশোক চক্রে উপস্থিত চব্বিশটি তীর ত্রিবর্ণের গৌরব ও মহিমাকে বিকশিত করেছে। সবুজ হল অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির প্রতীক। সবুজ রং ভয়ানক রোগ থেকে দূরে রাখতে ভালো ভূমিকা রাখে। আজ আমাদের দেশ অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি করেছে এবং সবুজ রং সেই অগ্রগতির প্রতীক। পতাকার মাঝখানে অশোক চক্র স্বাধীনতার প্রতীক।
জাতীয় পতাকা থেকে শিখুন
আমাদের জাতীয় পতাকা দেশবাসীকে ঐক্য, মানবতা, সত্যের মতো মূল্যবোধ গ্রহণের বার্তা দেয়। ভারতকে সেই দেশগুলির মধ্যে গণ্য করা হয় যারা ঐতিহ্য, মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্যকে বিশ্বাস করে এবং সম্মান করে। আমাদের দেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ এবং জাতীয় পতাকা সকল দেশবাসীকে ঐক্যের শিক্ষা দেয়। আমাদের মনে ঐক্য, আস্থা ও মানবতার মতো অনুভূতি গড়ে তোলে। প্রতি বছর 15ই আগস্ট দেশের প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। প্রজাতন্ত্র দিবস 26 জানুয়ারি পালিত হয় এবং প্রতি বছর দিল্লিতে একটি বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রজাতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।
মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ
আমাদের দেশ স্বাধীন করার পেছনে মুক্তিযোদ্ধাদের হাত রয়েছে। তারা ত্যাগ স্বীকার করেছে তাই আমরা সুখী ও স্বাধীন। অনেক সংগ্রাম ও বহু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছেন। আমাদের উচিৎ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগকে সম্মান করা এবং আমাদের জাতীয় পতাকাকে কখনো মাথা নত করতে দেওয়া উচিত নয়।
জাতীয় পতাকার নকশা
পিঙ্গালি ভেঙ্কায়ানন্দ জাতীয় পতাকার নকশা করেছিলেন। 1947 সালে 22 জুলাই সংবিধানের সভায় জাতীয় পতাকার রূপ গৃহীত হয়। জাতীয় পতাকার এই বর্তমান রূপটি 1950 সাল পর্যন্ত গৃহীত হয়েছিল। জাতীয় পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত 3:2। জাতীয় পতাকা দেশের অহংকার ও অহংকার প্রকাশ করে।
তেরঙ্গা উত্তোলন
প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে জাতি ইন্ডিয়া গেটে তেরঙ্গা উত্তোলন করে। এ সময় সেনারা একুশটি বন্দুকের স্যালুট দেয়। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানানো হয়। সত্যিকারের দেশপ্রেমিকরা কখনো দেশের সম্মান ও দেশের পতাকাকে মাথা নত হতে দেয় না। দেশে যখন মহাশোক হয়, তখন কিছু সময়ের জন্য তিরঙ্গা নামানো হয়।
জাতীয় পতাকা কোড পরিবর্তন
2002 সালে, জাতীয় পতাকা কোডে কিছু পরিবর্তন করা হয়েছিল। এই পরিবর্তন অনুযায়ী সাধারণ নাগরিককে পতাকা উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সাধারণ জনগণকেও বলা হয়েছে, তারা যখনই পতাকা উত্তোলন করবেন, তখন যেন জাতীয় পতাকার গৌরব ও সম্মান ক্ষুণ্ন না হয়। সাধারণ নাগরিকদের এ বিষয়ে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।
পতাকা দিয়ে কি করবেন না
দেশের আইন অনুযায়ী, জাতীয় পতাকা কখনই জল ও স্থল স্পর্শ করা উচিত নয়। পতাকাটি কভার বা টেবিলক্লথ হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। এটা শুধু পতাকার অপমান নয়, দেশেরও অপমান। পতাকা বালিশ হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে না। পতাকা কখনই উল্টে রাখা উচিত নয়। 2005 সালের জাতীয় পতাকা কোডের সংশোধনী অনুসারে, এটি ইউনিফর্ম হিসাবে পরা যেতে পারে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি সংবিধান অনুযায়ী এসব নির্দেশনা মেনে চলা প্রয়োজন। 2005 সালে, বেসরকারী খাত এবং সরকারী অফিস এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পতাকা উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, যা আজও অনুসরণ করা হচ্ছে।
উপসংহার
আগে সাধারণ মানুষের জাতীয় পতাকা উত্তোলন নিষিদ্ধ ছিল। আগে শুধু সরকারি কর্মকর্তারাই পতাকা উত্তোলন করতে পারতেন। কিন্তু এখন কোথাও সাধারণ মানুষকে পতাকা উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আমাদের জাতীয় পতাকা মাতৃভূমির ঐক্য, অখণ্ডতা ও শক্তির প্রতিনিধিত্ব করে। মুক্তিযোদ্ধা ও প্রকৃত দেশপ্রেমিকরা পতাকার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় প্রাণের পরোয়া করেন না।
আরও পড়ুন:-
- মেরা ভারত দেশ মহান প্রবন্ধ বাংলায় প্রবন্ধ স্বাধীনতা দিবসের প্রবন্ধ প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রবন্ধ ভারতে গণতন্ত্রের উপর প্রবন্ধ ভারতে গণতন্ত্রের উপর প্রবন্ধ প্রেম এবং দেশপ্রেমের উপর প্রবন্ধ (বাংলায় দেশপ্রেম প্রবন্ধ)
তাই এটি ছিল তিরঙ্গা পতাকার প্রবন্ধ (বাংলায় তিরাঙ্গা ঝান্ডা রচনা), আশা করি আপনার ভারতের জাতীয় পতাকা (ভারতীয় জাতীয় পতাকার উপর হিন্দি রচনা) বাংলায় লেখা প্রবন্ধটি ভালো লেগেছে । আপনি যদি এই নিবন্ধটি পছন্দ করেন, তাহলে এই নিবন্ধটি সবার সাথে শেয়ার করুন।