Dahej Pratha - যৌতুক প্রথার উপর রচনা বাংলায় | Essay On Dahej Pratha - Dowry System In Bengali - 2100 শব্দসমূহে
আজ আমরা যৌতুক প্রথা একটি অভিশাপের উপর একটি প্রবন্ধ লিখব (বাংলায় দহেজ প্রথম এক অভিশাপের প্রবন্ধ) । যৌতুক প্রথার উপর লেখা এই রচনাটি 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, 10, 11, 12 এবং কলেজ ছাত্রদের জন্য লেখা হয়েছে। আপনি যৌতুক প্রথার উপর লেখা এই প্রবন্ধটি ব্যবহার করতে পারেন (বাংলায় দাহেজ প্রাথার প্রবন্ধ) আপনার স্কুল বা কলেজ প্রকল্পের জন্য। আপনি আমাদের ওয়েবসাইটে অন্যান্য বিষয়ে বাংলায় প্রবন্ধ পাবেন, যা আপনি পড়তে পারেন।
যৌতুক প্রথার উপর প্রবন্ধ একটি অভিশাপ এবং সামাজিক কলঙ্ক (বাংলায় দহেজ প্রাথা রচনা) ভূমিকা
যৌতুক প্রথা একটি খারাপ প্রথা যা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চলে আসছে। এই কুপ্রথা অভিশাপের চেয়ে কম কিছু নয়। যৌতুক প্রথার কারণে কত নববধূ ও নারী প্রাণ হারিয়েছে তা না জানার। যৌতুক মানে বিয়ের সময় বা আগে মেয়ে সন্তানের দেওয়া মূল্যবান উপহার এবং দামী জিনিস যেমন নগদ, গাড়ি ইত্যাদি। যৌতুক প্রথা অনেকের কাছেই প্রচলিত। কিন্তু যৌতুক প্রথার কারণে কত নিরীহ নারীকে সহিংস ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। সরকার যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে কঠোর নিয়ম করেছে। কিন্তু আজও অনেক জায়গায় যৌতুকের প্রথা রয়েছে যা একেবারেই ভুল। যৌতুক নেওয়া ও দেওয়া দুটোই অন্যায়। আজকাল অনেক বাড়িতে মেয়ে জন্মের পর থেকেই বাবা-মা দুশ্চিন্তায় থাকেন যে বিয়ের সময় কত যৌতুক দেওয়া হবে? তাই মেয়ে জন্মে মানুষ দুঃখ পায় আর মেয়েদের বিদ্রুপ শুনতে হয়। অভিভাবকরা মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য নয়, যৌতুকের জন্য অনেক বছর আগে থেকে অর্থ যোগ করা শুরু করে। যৌতুক প্রথা দেশের অগ্রগতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই কুপ্রথা নারীদের অপমানজনক ও মানসিকভাবে হয়রানি করছে। যৌতুক প্রথা দেশের অগ্রগতির কলঙ্ক, যা নির্মূল করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
যৌতুক প্রথা একটি গুরুতর সমস্যা
দেশের বহু সমস্যার মধ্যে যৌতুক প্রথা একটি গুরুতর সমস্যা, যাকে উপড়ে ফেলা জরুরি হয়ে পড়েছে। আর কতদিন যৌতুক প্রথার কারণে মেয়ে শিশুরা অপমানিত জীবন যাপন করবে। দেশে এটি মহামারীর মতো ছড়িয়ে পড়েছে, এটি বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি।
নারী ভ্রূণ হত্যার মতো অপরাধ
যৌতুক প্রথা এমনভাবে সমাজে প্রচলিত হয়ে গেছে যে মানুষ চায় না তাদের ঘরে কন্যা সন্তানের জন্ম হোক। কন্যা সন্তানের জন্ম হলে যৌতুকের টাকা যোগাতে হয়, তাই মেয়ের জন্মের আগেই বাবা-মা তাদের সন্তানকে মায়ের গর্ভে হত্যা করে। এটি একটি নিন্দনীয় অপরাধ এবং মেয়েদের প্রতি মানুষের ভুল মানসিকতা প্রকাশ করে।
যৌতুক প্রথার প্রচলন ও অবৈধ দাবি
পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, আগে মেয়ের বাবা-মা মেয়ের বিদায়ের সময় কিছু উপহার দিতেন। এতে ছেলেদের কোনো চাহিদা ছিল না। বিবাহ একটি শুভ বন্ধন হিসাবে বিবেচিত হয়। তখন ছেলেরা স্বার্থপর থাকত এবং মূল্যবান জিনিস দাবি করত না। সময়ের সাথে সাথে হিন্দু ধর্মে যৌতুক প্রথা ভিন্ন রূপ নেয়। আজ ছেলের বিয়ের আগে লাখ লাখ টাকা নগদ, গয়না, গাড়ি ইত্যাদি দামি জিনিস দাবি করে মেয়ে মানুষ। অনেক জায়গায় মেয়েদের হুমকি দেওয়া হয় যে দাবি না মানলে বিয়ে হবে না।
মেয়েদের উপর অত্যাচার
ছেলেদের মতে যৌতুকের দাবি পূরণ না হলে তারা বিয়ের পর নারীদের শোষণ করে। নারীরা প্রতিদিন যৌতুকের জন্য মানসিকভাবে হয়রানির শিকার হয়, যাতে তারা তাদের বাড়ি থেকে আরও যৌতুক আনতে পারে। যৌতুক অবিলম্বে না পেলে কিছু ছেলে মেয়েটিকে বিয়ের মণ্ডপে ছেড়ে দেয়। এটি একটি আইনগত অপরাধ।
যৌতুক প্রথার কুফল
বিয়ে উপলক্ষে মেয়েরা চাইলে যৌতুক দিতে না পারলে বিয়ের পর মেয়েদের শ্বশুরবাড়িতে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। মেয়েদের জীবন নরকে পরিণত হয়।মেয়েরা নির্যাতিত হয়। অনেক সময় অবস্থা এতটাই গুরুতর হয় যে সমাজের ভয়ে সে তার বাড়িতে ফিরে না গিয়ে আত্মহত্যা করে। যৌতুক প্রথার কারণে অনেক নববধূর জীবন নষ্ট হয়েছে। শ্বশুরবাড়ির মতো কিছু নরকে, যৌতুক না পেয়ে মেয়েদের পুড়িয়ে মারা হয়। আমরা এ ধরনের অপরাধের তীব্র নিন্দা জানাই। তবে সরকারকে এর বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে।
রক্ষণশীল চিন্তাধারা এবং পুরানো রীতিনীতি
কিছু মানুষ যৌতুকের মতো কুপ্রথাকে রীতি হিসেবে অনুসরণ করে। এ ধরনের লোকেরা বিয়ের সময় যৌতুক দেওয়ার জন্য মেয়ে শিশুকে চাপ দেয়। ঐতিহ্যের নামে মেয়ে শিশুর ওপর চলছে মানসিক নির্যাতন। পুরানো প্রথায় আগেকার মানুষ নিজ ইচ্ছায় যৌতুক দিত। কিন্তু আজকাল ছেলেদের যৌতুক নেওয়া একটা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এই ধরনের লোকেরা যৌতুকে যত বেশি গয়না এবং অর্থ পায়, তারা তত বেশি গর্ববোধ করে।
আজকের যৌতুক প্রথা
যৌতুক প্রথা সমাজকে পুকুরের মতো নোংরা মাছের মতো নোংরা করে তুলছে। যৌতুক গ্রহণকারীর লজ্জা হওয়া উচিত, সে এমন অপরাধ করে তাকে ঐতিহ্যের কাপড় পরিয়ে দেয়। আজকাল ছেলেরা যৌতুক না পেলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এখনকার বিয়েতে ছেলের আয় যত বেশি সে তত বেশি যৌতুক পায়। দরিদ্র, মধ্যবিত্ত ও সকল শ্রেণীর মধ্যে যৌতুক প্রথা প্রচলিত হয়ে উঠেছে।
শিক্ষার অভাব
অশিক্ষিত হওয়ার কারণে যৌতুক প্রথার এই ভয়াবহ রূপ এদেশের অনেকেই বুঝতে পারছে না। তারা বোঝে যৌতুক দেওয়া তাদের ঐতিহ্যগত কর্তব্য। অশিক্ষিত হওয়ার কারণে এমন মানুষ অপরাধী ও লোভী মানুষের মন বোঝে না।
দুর্বলতার সুবিধা
বর্তমানে প্রতিটি পরিবারে একজন সুন্দরী, যোগ্য এবং ভালো মেয়ের প্রয়োজন। যদি কোনো মেয়ের গাঢ় গাত্রবর্ণের মতো কোনো ত্রুটি বা কোনো ধরনের সমস্যা থাকে, তাহলে তার বিয়ে তাড়াতাড়ি সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে মেয়েরা যৌতুক দেওয়ার চেষ্টা করে, যাতে মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। এটি যৌতুক প্রথাকে উৎসাহিত করে। যৌতুক প্রথা তার শক্ত শিকড় ও শাখা-প্রশাখা বিস্তার করছে, সময় এসেছে এই শিকড়গুলোকে উপড়ে ফেলার।
কর্মসংস্থানের অভাব
আমাদের দেশে অনেক যুবক বেকার। এ ধরনের বেকার যুবকরা বিয়েতে মেয়েদের কাছে যৌতুক চায়। তারা লাখ লাখ টাকা যৌতুকের সাহায্য চায়, যাতে কেউ ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে পারে বা বিয়ের পর সেই টাকা দিয়ে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারে। এই দায়িত্বজ্ঞানহীন যুবকদের টাকা না দিয়ে শিক্ষা দিতে হবে। এ ধরনের মানুষ কখনো চাকরি বা ব্যবসা করে না। মেয়ের টাকায় সারা জীবন কাটিয়ে দিতে চায়।
উপসংহার
যৌতুক প্রথার কারণে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। প্রতিদিনই খবরে যৌতুকের জন্য নারী খুন হচ্ছে। পরিবারে এমন অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের জন্য দোষীদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। আমাদের সকলকে একসাথে যৌতুক প্রথা নামক এই কুপ্রথার অবসান ঘটাতে হবে, যা অনেক নারীর ধ্বংসের জন্য দায়ী। একজন নারী যখন তার যথাযথ সম্মান পাবে, তখন দেশকেও উন্নত দেশ বলা হবে। দেশ একবিংশ শতাব্দীতে আরও অগ্রগতি করছে, তাই এ ধরনের অপপ্রচার বন্ধ করতে হবে। সুতরাং এটি ছিল একটি সামাজিক কলঙ্কের উপর যৌতুক প্রথার রচনা, আমি আশা করি আপনি যৌতুক প্রথা একটি সামাজিক কলঙ্কের উপর বাংলায় লেখা প্রবন্ধটি পছন্দ করেছেন (হিন্দি প্রবন্ধ দহেজ প্রথা এক সামাজিক কলঙ্ক) । আপনি যদি এই নিবন্ধটি পছন্দ করেন, তাহলে এই নিবন্ধটি সবার সাথে শেয়ার করুন।